আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হামজা চৌধুরী

আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হামজা চৌধুরী
হামজাচৌধুরী একজন উদীয়মান ফুটবলার।ইংল্যান্ড প্রিমিয়ার লীগে খেলেন লেষ্টারসিটি ক্লাবের পক্ষে। লেষ্টার সিটি কয়েক বছরআগে মর্যাদাবান ইংল্যান্ড প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা জিতেছিল ফুটবল বিশ্বকে তাক লাগিয়ে। কারনএর আগে কেউই ভাবেননিঅখয়াট লেষ্টার শিরোপা জিততে পারে বড় বড়ক্লাবগুলোকে পিছনে ফেলে।

লেষ্টারের হয়ে প্রায়ই মাঠে নামেন হামজা চৌধুরী । তার জন্ম কিংবা বেড়ে উঠা কোনটাই বাংলাদেশে নয়। তবে তার মা একজন বাংলাদেশী ব্রিটিশ। এজন্য যখনই তিনি খেলতে নামেন বাংলাদেশের নাম চলে আসে।

   ইউরোপে বাচ্চাদের পরিচিতি গড়ে উঠে সাধারনতমাকে ঘিরেই। ছেলেমেয়েরা থাকে কিংবা বড়হয় মায়ের সাথেই। ইউরোপের সমাজ এজন্যই মাতৃতান্ত্রিক।যেহেতু সামাজিক এবং ধর্মীয়ভাবে বিয়েকরাটা এখানে বাধ্যতামুলক নয়। তাই বিয়েছাড়াই প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ মহিলা বসবাস করতে পারেন। এখানকার সমাজ ব্যবস্থা এরকমই। সেজন্যই ছেলেমেয়েদের আইনগত অভিভাবক হিসাবে প্রথমেই আসে মায়ের নাম। তাই বলে বাবারা উহ্য থাকেন এমন নয়। বাবারাও সমান গুরুত্ব পান। কিন্তু প্রাচ্যেরদেশ সমূহে যেভাবে সবকিছু পিতৃতান্ত্রিক পশ্চিমা সমাজ ব্যবস্থায় এর উল্টো। পশ্চিমাসমাজ ব্যবস্থায় বিয়ে করাটা গৌণ।কারো ইচ্ছা হলে বিয়ে করেন।পার্টি করেন। ধর্মীয়ভাবে রেজিষ্ট্রি করেন। এর কোনটাই এখানকার সমাজ কিংবা রাষ্ট্রব্যবস্থায় বাধ্যতামুলক নয়।   হামজা চৌধুরীর বাবা একজন ক্যারিবিয়ান ব্রিটিশ। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুন্জ গ্রেনাডায় তার বাবার জন্মস্থান।সেই হিসাবে তিনি গ্রেনাডা জাতীয় ফুটবল দলেও হয়েও খেলার অধিকার কিংবা যোগ্যতা রাখেন। হামজা চৌধুরী চাইলে যেকোন সময় গ্রেনাডার হয়েখেলতে পারবেন। তবে হামজা চৌধুরীর মায়ের দেশ যেহেতু বাংলাদেশ সে হিসাবে তিনি বাংলাদেশকেই রাখেন প্রথম পছন্দে। তার নানার বাড়ি বাংলাদেশের সিলেটে। তিনি বাংলা (সিলেটী) ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারেন।

পিতার সাথে বিচ্ছেদের পর হামজা চৌধুরীর মা বিয়ে করেছেন আরেক বাংলাদেশী বংশদ্ভূত ব্রিটিশকে। হামজা চৌধুরীর মায়ের বাড়ী বাংলাদেশের হবিগন্জ জেলার বাহুবল উপজেলায়। স্থানীয়ভাবে স্নানঘাট ইউনিয়নের দেওয়ান বাড়ীতে। এ পর্যন্ত অসংখ্যবার বাংলাদেশে ভ্রমণ করেছেন হামজা চৌধুরী।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে হামজা চৌধুরী অনেকটা নিয়মিত খেলেন লেষ্টার সিটির পক্ষে। লেষ্টার সিটি একাডেমীতে খেলার সময় ১৬ বছর বয়সেই নজরে পরেন ফুটবল বোদ্ধাদের। ২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর হামজা লিভারপুলের বিরুদ্ধে ৮২ মিনিটে বদলী খেলোয়াড় হিসাবে প্রথমবারের মত ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে খেলেন লেষ্টারের পক্ষে। সেই থেকে তিনি আলোচনায় আছেন। ২০২০সালের ২২শে অক্টোবর হামজা চৌধুরীর জন্য আরেকটি স্মরনীয় দিন। এদিন তার অভিষেক হয় ইউরোপীয়ান ফুটবলে। ৭১ মিনিটে বদলী খেলোয়াড় হিসাবে মাঠে নামেন জরিয়ালুহান্ষকের বিরুদ্ধে। এর মাধ্যমে প্রথম বাংলাদেশী বংশদ্ভূত খেলোয়াড় হিসাবে ইউরোপের যেকোন প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে নাম লেখান। বাংলাদেশের ফুটবল মান সর্বস্ব খেলোয়াড়ের অভাবে মুখ থুবরে পড়ে আছে। বাফুফের উচিত হামজা চৌধুরীর ন্যায় একজন প্রতিভাবান ফুটবলারকে কাজে লাগানো। যেহেতু হামজা চৌধুরী নিজেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মিডিয়ায় বাংলাদেশের হয়ে খেলার জন্য। আরও পড়ুন: শ্রীলংকায় চার জাতি কাপেও ব্যর্থ বাংলাদেশ জামাল ভুঁইয়া ডেনমার্কে প্রফেশনাল ফুটবল লীগে খেলেছেন। কিন্তু তিনি সর্ব ইউরোপীয়ান কোন প্রতিযোগিতমুলক ফুটবলে লীগে খেলেননি। এছাড়া ইংলিশ ফুটবল লীগ বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষনীয় ক্লব ফুটবল প্রতিযোগিতা। এখানে খেলেন বিশ্বের সেরা ফুটবলাররা। সেই হিসাবে হামজা চৌধুরীর খেলার মান অবশ্যই অনেক উন্নত। বিশ্বের যেকোন দেশই তাকে পেতে চাইবে। যেমনটি গ্রেনাডা ফুটবলও তাকে পেতে তাদের আগ্রহ জানিয়েছে। তাই বাফুফের উচিত হামজা চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করে তাকে বাংলাদেশ জাতীয় দলে সুযোগ দেয়া।

Related posts

Leave a Comment